ইউবিজি নিউজ ডেস্ক : আনুষ্ঠানিকভাবে পেশ করা হল তৃণমূল কংগ্রেসের রিপোর্ট কার্ড। আর সেই কার্ডে তুলে ধরা হয়েছে গত ১০ বছর রাজ্যে দায়িত্বে থেকে কী কী উন্নয়ন করেছে তারই খতিয়ান। আর এই রিপোর্ট কার্ড নিয়েই আগামিকাল আর্থাৎ শুক্রবার থেকেই রাজ্যের মানুষের কাছে পৌছে যাবে দলীয় নেতা কর্মীরা। সেইজন্য একই সঙ্গে সূচনা করা হয়েছে বঙ্গধোনী যাত্রাও। বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের এই রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ইন্দ্রনীল সেনসহ দলের প্রথম সারির নেতৃত্বরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়ে রিপোর্ট কার্ডের কথা জানিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
শিয়রে বিধানসভা নির্বাচন। তৃণমূলকে (TMC) কড়া টক্কর দিতে কোমর বেঁধেছে বিজেপি। রাজ্যে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির সভার দিনই গত ১০ বছরের উন্নয়নের খতিয়ান পেশ করল তৃণমূল। এক দশকে ১১টি ক্ষেত্রে উন্নয়নের মাইলস্টোন তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত রিপোর্ট কার্ড এ কথাই তুলে ধরলেন দলীয় নেতৃত্ব। এদিনের রিপোর্ট কার্ড (Report Card) প্রকাশ অনুষ্ঠানে তৃণমূল ভবনে হাজির ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রীরা।
Today, with immense pride, we are happy to release #TMCReportCard which highlights the key milestones, across 11 sectors, that @MamataOfficial has achieved in the past 10 years!
Didi continues to take Bengal to greater heights with new fervor! #TMCReportCard pic.twitter.com/6RMfSZXCn3
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) December 10, 2020
যদুবাবুর বাজারের ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে মমতা, বললেন ‘তৃণমূল বাংলার, বিজেপি দিল্লির দল’ রাজ্যের ১০টি ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়নের কথা ওই রিপোর্ট কার্ডে তুলে ধরা হয়েছে। যার মধ্যে প্রথমেই রয়েছে রাজ্যবাসীর গড় আয়। গত এক দশকে বাংলার মানুষের আয় দ্বিগুণ বেড়েছে। বেড়েছে জিডিপি। শিল্প ও অনুসারি শিল্পক্ষেত্রে আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্বিতীয় মাইলস্টোন তৈরি হয়েছে শিক্ষাক্ষেত্রে। শিক্ষা, ক্রীড়া, শিল্প ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে বাজেট বেড়েছে অনেকটাই। কন্যাশ্রী, সবুজসাথী, মিড-ডে মিল, পোশাক বিলির উদ্যোগে উপকৃত হয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
গত ১০ বছরে রাজ্যে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ৫০টি কলেজ-সহ একাধিক নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে।
রাজ্য সরকারে উল্লেখ্যযোগ্য উন্নয়নের মধ্যে অবশ্য রয়েছ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আমজনতার চিকিত্সায় উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে। তেমনই রাজ্যজুড়ে তৈরি হয়েছে হাসপাতাল, বেড়েছে বেড সংখ্যা। ফলে স্বাস্থ্যখাতে বাজেটেও বেড়েছে ৩ গুন। মমতা সরকারের খাদ্যসাথী প্রকল্পে উপকৃত হয়েছে রাজ্যের প্রায় ১৮ কোটি মানুষ। বাংলা আবাস যোজনায় নিজের ঘর পেয়েছেন প্রায় ৩৪ লক্ষ মানুষ। নির্মল বাংলা প্রকল্পে তৈরি হয়েছে শৌচাগার।
বাংলার রাস্তাঘাটের অভূতপূর্ব উন্নতি রয়েছে। বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে গিয়েছে বিদ্যুত্ ও পানীয় জল। রিপোর্ট কার্ডে উল্লেখ করা হয়েছে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের। যার মাধ্যমে বাংলার কৃষিজীবীরা আর্থিক সহায়তা পেয়েছে।
সমাজের প্রতিক্ষেত্রে মহিলাদের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করতে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা নিয়েছে এই সরকার। রূপশ্রী প্রকল্পে তাঁদের বিয়ের ক্ষেত্রে সুবিধা দিয়েছে. তেমনই পঞ্চায়েত-সহ একাধিক ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশীদারিত্ব বাড়ানোর জন্যও পদক্ষেপ করেছে।
তপশিলি জাতি ও উপজাতির উন্নয়নে একাধিক নতুন প্রকল্প আনা হয়েছে। প্রবীণদের জন্য পেনশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কর্মসংস্থানের দিকেও বাকিদের চেয়ে অনেক এগিয়ে বাংলা। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কাজ পেয়েছেন ১ কোটি ৬৩ লক্ষ মানুষ। ২০১০ সালের তুলনায় কারখানা বেড়েছে ১৫ শতাংশ। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ে কাজ পেয়েছে প্রায় দেড় কোটি মানুষ। রি্পোর্ট কার্ডে উল্লেখ করা হয়েছে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের কথাও।
শুধু রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেই থেমে থাকেনি তৃণমূল। উন্নয়নের তালিকা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আয়োজন করা হয়েছে বঙ্গধ্বনি যাত্রা। শুক্রবার থেকেই শুরু হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের এই কর্মসূচি। আগামা ১০ দিন রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে তিন থেকে পাঁচটি দল যাত্রা শুরু করবে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে রাজ্যে ৪ হাজার নেতা ৯৫০টি দলে ভাগ হয়ে ২৭ হাজার ৫০০ এলাকায় যাবেন। আর এই ভাবেই পৌছে দেওয়া হবে তৃণমূলের রিপোর্ট কার্ড। একই সঙ্গে রাজ্যেবাসীকে দেওয়া হবে ২০২১ সালের একটি পকেট ক্যালেন্ডার। যেখানে লেখা থাকবে দিদিকে বলো। ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের পরিকল্পনায় এই প্রচারাভিযান শুরু হচ্ছে বলেও দলীয় সূত্রে খবর।