কোচবিহার, ১২ জানুয়ারিঃ কোচবিহার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষে শুরু হলো বিবেক চেতনা উৎসব। এই উৎসবের সূচনা করলেন রাজ্যের মন্ত্রী, উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক এবং অন্যান্যরা। খুব ভালো কথা, কিন্তু এই উৎসবের ব্যানার ঘিরেই কার্যত প্রশ্নচিহ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন।
ব্যানারের একপাশে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ, অপর পাশের স্বামী বিবেকানন্দের মুখ। মাঝে ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায়’ কথাটি ও লেখা রয়েছে। শুধু নেই স্বামী বিবেকানন্দের নাম এবং কত তম জন্ম জয়ন্তী বা জন্ম দিবস তার উল্লেখ।
প্রশ্ন উঠছে, এই দুটি লাইন লিখতে খুব খরচা হয়ে যেত কি জেলা প্রশাসনের? স্বামীজীর জন্মদিন উপলক্ষে বিবেক চেতনা উৎসব খুব ভালো কথা, কিন্তু মনীষীর নামটি পর্যন্ত উল্লেখ করতে এত দ্বিমত কেন জেলা প্রশাসনের?? একই ধরনের চিত্র দেখা গেল রাজনৈতিক দল বিজেপির ব্যানারেও। সেখানে স্বামীজীর নাম থাকলেও বিরাট করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি। সেখানে স্বামীজীর ছবি স্থান পর্যন্ত পাইনি।
বিজেপির অনুষ্ঠান মঞ্চের একটি পাশে স্বামীজীর একটি ছবি লাগানো রয়েছে ঠিকই, কিন্তু মূল ব্যানারে রাজনৈতিক ছাপ প্রকাশ্যে।
সাধারণমানুষ অভিযোগ করছেন এই দুই ক্ষেত্রেই। কলেজ ছাত্র শুভদীপ সরকারের কথায়, শাসকদল সহকারী প্রচার মাধ্যমে রাজনীতি দেখাচ্ছেন মনীষী ব্যবহার করে, আবার বিরোধী দল একইভাবে রাজনীতি করছেন মনীষী ব্যবহার করে। স্বামীজি যখন স্বামীজি হয়ে ওঠেন তখন এরা কোথায় ছিল। আজ রাজনীতির জন্য স্বামীজীকে ব্যবহার কতটা যুক্তিযুক্ত??
কোচবিহার জেলা বিজেপির সম্পাদক রাজু রায় এই বিষয়ে মন্তব্য করে বলেন, সহকারী প্রচার ব্যানারে অবশ্যই স্বামীজীর নামের উল্লেখ থাকা প্রয়োজন ছিল। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, প্রশাসন তো এখন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে চালাচ্ছেন সুতরাং তাদের কাছে এর থেকে বেশি কি আশা করা যায়।
কোচবিহার পৌরসভার বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএম সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা মন্তব্য করে বলেন, এই দুই রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বদের মানুষের কাছে কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই, তাই মনীষীদের নাম ব্যবহার করে এরা রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের কাছ থেকে আর কি আশা করা যায়।
তবে পুরো ঘটনায় জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে কোনো রকম কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।



